দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় সংক্রমণের হার। কম নমুনা পরীক্ষা করা হলেও শনাক্তের হার বেশি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। সঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুও। গত এক সপ্তাহে মারা গেছেন ১২ জন, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪ জন বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য নিয়ে সাধারণ মানুষের উদাসীনতায় বেড়েছে সংক্রমণ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ওমিক্রনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে সামনে সংক্রমণ ও মৃত্যু আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।
দেশে সংক্রমণ বাড়ছে, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা এখনও কম। কিন্তু এখন থেকে দুই সপ্তাহ পর সংক্রমণ পরিস্থিতি যে বাড়বে না বা মৃত্যু আরও হবে না, এর নিশ্চয়তা নেই বলেই মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, টিকার অ্যান্টিবডি কমে যাওয়া এবং বুস্টার ডোজ নিতে অনীহার কারণে ঝুঁকিতে আছেন অনেকেই।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, শনাক্তের হার গত এক সপ্তাহে গড়ে ১২ শতাংশ। ৫ শতাংশের ওপরে কয়েক দিন অবস্থান করলেই তাকে রিস্ক ফ্যাক্টর বলা হয় এবং তা নতুন ঢেউয়ের আগমনকে ইঙ্গিত দেয়। গত এক সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২৫৩ জন, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১ হাজার ৭৪৩ জন বেশি। কম নমুনাতেও শনাক্তের সংখ্যা বেশি। করোনার বিগত ঢেউয়ে হাজারের ওপর শনাক্ত হলে তা ১০ শতাংশের কাছাকাছি থাকতো, তবে এবার পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ বিষয়ক অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ৫ শতাংশের নিচে যখন ২ শতাংশে চলে গেলো, তখনও কিন্তু করোনা ছিল। এখন আবার নতুন একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট এসেছে। তাতে সংক্রমণ বাড়ছে। ভয়ের কারণ হচ্ছে—বেশি মাত্রায় যদি সংক্রমণ বাড়ে, তাহলে যাদের অন্যান্য রোগ, যেমন- হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, হৃদ রোগীদের অবস্থা খারাপ হতে পারে। সেজন্য যখন সংক্রমণ বাড়তে থাকে, তখন যা যা সতর্কতা আমাদের নেওয়া প্রয়োজন, তা অবশ্যই নিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিকল্পনার ঘাটতি থাকার ফলে প্রায় ৩৩ লাখ লোক এখনও একটি ডোজ টিকা পায়নি। যারা পায়নি তাদের মধ্যে বয়স্ক, বস্তিবাসীসহ নিরক্ষর মানুষ আছে। টিকা না নেওয়ার ফলে তারা ঝুঁকিতে আছে। তারপর অনেক কম সংখ্যক মানুষ বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। তাই এখানেও অনেক মানুষ ঝুঁকিতে আছেন।