শনিবার ফ্রান্স টু টেলিভিশকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভ লা দ্রিয়াঁ ওই দেশ দুটিকে ‘ছলনা, বড় ধরনের বিশ্বাস ভঙ্গ ও অবজ্ঞা’ করার দায়ে অভিযুক্ত করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
অকাস নামের ওই নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় প্রথমবারের মতো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরিতে অস্ট্রেলিয়াকে প্রযুক্তি সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এই পদক্ষেপের কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের হাজার হাজার কোটি ডলারের ওই চুক্তি বাতিল হয়। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলার চেষ্টায় নতুন এই নিরাপত্তা জোট গঠন করা হয়েছে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ত্রিপক্ষীয় এ জোটের ঘোষণা দেন। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সকে নতুন জোটের কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে লা দ্রিয়াঁ বলেন, মিত্রদের মধ্যে একটি ‘গুরুতর সংকট’ চলছে। ফ্রান্স টু-কে তিনি বলেন, ঘটনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সম্পর্কের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো একটি গুরুতর রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে পরামর্শের জন্য আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছি, এতেই বর্তমানে দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের বিদ্যমান সংকটের মাত্রা বোঝা যায়। পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়নের জন্যই রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।যুক্তরাজ্যকে ‘সবসময়ের সুবিধাবাদী’ দেশ হিসেবে অভিযুক্ত করে সেখান থেকে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানোর ‘কোনো প্রয়োজন’ ফ্রান্স দেখছে না। এই পুরো প্রক্রিয়ায় ব্রিটেনের ভূমিকা অনেকটা দর্শকের।
অকাসের দেওয়া বিবৃতিতে বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, নতুন এই প্রতিরক্ষা চুক্তির মানে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের সপ্তম দেশ হিসেবে পারমাণবিক শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের অধিকারী হতে যাচ্ছে। নতুন এ প্রতিরক্ষা জোট সাইবার সক্ষমতা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ‘সমুদ্রের তলদেশে অতিরিক্ত সক্ষমতার’ ওপরও নজর দেবে।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আসছে দিনগুলোতে বাইডেন প্রশাসন ফ্রান্সের সঙ্গে আলোচনা করে মতপার্থক্য দূর করার চেষ্টা করবে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ফ্রান্সের ‘হতাশা’ বুঝতে পারছেন এবং দুই দেশের সম্পর্ককে তারা ‘কতোটা গুরুত্ব দেন’ সে সম্পর্কে ফ্রান্সকে নিশ্চিত করতে তাদের সঙ্গে কাজ করার আশা করছেন।