৮০ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ৮০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের বাসভবন ফিরোজায় নিয়ে আসা হয় বলে রাত পৌনে ৯টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী জানান, তৃতীয়বারের মতো হাসপাতালে ভর্তির ৮০ দিন পর বাসায় গেলেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ১৩ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। এরপর দীর্ঘদিন সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গত ১০ জানুয়ারি তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার খবরে হাসপাতালে ভিড় জমান দলের নেতাকর্মী ও অনুরাগীরা। কেন্দ্রীয় নেতারাও হাসপাতাল থেকে বিএনপিপ্রধানের গাড়িবহরে যুক্ত হন। রাতে বাসার সামনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতির কারণে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা কিছুটা বিরক্ত বোধ করেন। দফা দফায় ফিরোজার সামনে থেকে নেতাকর্মীদের সরে যেতে মাইকে অনুরোধ জানায় পুলিশ। যদিও নেতাকর্মীরা নেত্রীকে এক নজর দেখতে মরিয়া হয়ে অবস্থান নেন তার বাসার সামনে।
পুলিশের অনুরোধের পরও নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে থেকে সরে না যাওয়ায় এক পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কিছুটা ধমকের সুরে নেতাকর্মীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিতেও দেখা গেছে। খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার খবরে পুলিশের পক্ষ থেকে গুলশানে ৭৯ রোডের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভার কেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
চিকিৎসক দলের প্রধান ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, সারাদেশে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ বেড়েছে। এই হাসপাতালে (এভার কেয়ারে ) জানুয়ারি মাসেই ৩৮০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে এই মুহূর্তে বাসায় রেখেই তার চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। এই সংক্রমণ যদি আবারও সৃষ্টি হয়, তাহলে এর ব্যবস্থাপনা জটিল ও কঠিন হয়ে যাবে। সেজন্য আমরা তাকে ডিসচার্জ করিয়েছি।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে এভার কেয়ার গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, তিনি ক্লিনিয়ালি স্ট্যাবল, নট কিওর। আর কোভিড সিচুয়েশনের আশঙ্কায় আপাতত তাকে বাসায় পাঠাচ্ছি। পরে যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে আবারও হাসপাতালে আনবো। কিন্তু তিনি ডিজিজ থেকে এখনও ফ্রি হননি।