করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত বছরের অক্টোবরে ভারতের সঙ্গে ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির আওতায় বিমান চলাচল শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
এরপর চলতি বছরের এপ্রিলে মহামারীর কারণে ভারতে বিপর্যস্ত অবস্থার কারণে বিশেষ ব্যবস্থার ওই বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এয়ার বাবল পুনরায় চালুর খবর দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
‘এয়ার বাবল’ চুক্তিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু
টিকার প্রতিশ্রুতি
অনুষ্ঠানে ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহের অগ্রগতি জানতে চাইলে তার কোনো দিনক্ষণ জানাতে পারেননি ভারতীয় হাই কমিশনার দোরাইস্বামী।
তিনি বলেন, “এটা এখন ভারতের চাহিদা মেটানোর প্রক্রিয়ায় আছে। আমাদের কোভিড পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আমরা ভারতের চাহিদা মেটানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছিলাম।
“এর মধ্যে আমরা অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর কাজ এতদিন করেছিলাম। আশা করি, ভারতে আমাদের চাহিদা মিটে গেলে বাংলাদেশেও পাঠানো শুরু হবে।”
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল।
সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে চুক্তি করেছিল সরকার। কিন্তু ৭০ লাখ ডোজ আসার পর ভারত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে আর চালান আসেনি।
ভারত থেকে কেনা টিকা পাঠানো নিয়ে কাজ চলছে মন্তব্য করে দোরাইস্বামী বলেন, “আমরা বলছি না, আমাদের সরবরাহ নাই। ভারতে সঙ্কট মিটে গেলে আমরা পাঠাব।
“আমরা বলছি, যখনই সম্ভব হবে আমরা টিকা পাঠাব। কারণ, বাংলাদেশ আমাদের অগ্রাধিকার তালিকায় আছে। বাংলাদেশ টিকা কেনার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।”
ফাইল ছবি
এর মধ্যে ভারতীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেক তাদের করোনাভাইরাসের টিকা ‘কোভ্যাক্সিনের’ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাংলাদেশে করতে গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে আবেদন করে।এরপর অগাস্টের শুরুতে কোভ্যাক্সিন টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ করার অনুমোদন পায় ভারত বায়োটেক ও আইসিডিডিআর,বি।
ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সায়েন্টেফিক রিসার্চ মিলে কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে। গত জানুয়ারিতে এ টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে।
তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানুষের ওপর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ তথ্য না আসায় উদ্বেগ রয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
জানুয়ারিতে শুরু ভারতের গণ টিকাদান কর্মসূচিতে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত কোভিশিল্ডের পাশাপাশি কোভ্যাক্সিনও দেওয়া শুরু হয়।
বাংলাদেশে কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অগ্রগতির বিষয়ে দোরাইস্বামী বলেন, “এমন পর্যায়ে আমরা ট্রায়ালের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যখন টিকা আবিষ্কারের প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল।
“এরপরে ভারত বায়োটেক কোভ্যাক্সিন টিকা কেবল ভারতে নয়, অন্যান্য দেশেও ব্যবহার করেছে। সুতরাং এই পর্যায়ে এই টিকার ট্রায়ালের তেমন প্রয়োজন নেই।”
নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে ভারত বায়োটেক তাদের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় আবেদন করেছে।
“এই টিকার ট্রায়ালের প্রশ্ন এখন বাংলাদেশ কিংবা ওই কোম্পানির জন্য নেই। এই টিকা সরবরাহ করার মতো কোনো সহযোগিতায় দু’দেশ গেলে আমরা সেটা পরবর্তীতে দেখব।”