বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৪৭ বার
আপডেট : বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশের দিকে নিয়ে যাওপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) গাজীপুরের মৌচাকের জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩২তম এশিয়া-প্যাসিফিক এবং ১১তম জাতীয় স্কাউট জাম্বুরী ২০২৩-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির  ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ এবং জাম্বুরী আয়োজক কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বক্তব্য দেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লা, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হারুনুর রশীদ, জীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান, জিএমপি কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্কাউটদের মাঝেই সুপ্ত আছে দেশের ভবিষ্যৎ। ছোট্ট সোনামণিরা, যখনই আমি তোমাদের মাঝে আসি, আমার ছোট্ট শিশু ভাই, মাত্র ১০ বছরে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত রাসেলকে খুঁজে পাই। আমি চাই, আজকের শিশুদের জীবন নিরাপদ ও সুন্দর হোক। আজকের শিশু-কিশোররাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক। আজকের শিশু, যারা বড় হবে উদার মন নিয়ে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে। দেশকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং গঠনে কাজ করবে।’

প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক ও জাতীয় স্কাউটদের জাম্বুরী চিহ্নিত করে একটি স্মারক ডাক টিকিট ও অবমুক্ত করে বলেন, আমি প্রতিটি শিশুকে দেশের একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। স্কাউটদের নৈতিক ও জীবনমুখী শিক্ষা দিয়ে, সেবা দেওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন করে দেশপ্রেমিক ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের দেশটা আরো চমৎকারভাবে গড়ে উঠুক যেখানে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোন স্থান হবে না। দেশ সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসমুক্ত থাকবে। কাজেই বাংলাদেশে যে শিশুরা বড় হবে তারা উদার মন নিয়ে বড় হবে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং দেশকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা কাজ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কাউটিং নতুন প্রজন্মকে নৈতিক ও জীবনধর্মী প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে তরুণদের মাঝে আধুনিক, প্রগতিশীল ও সৃজনশীল গুণাবলী বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত হচ্ছে এবং সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলছে।

হিসেবে সমাজ সেবার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান ও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কোভিড-১৯ কালীন স্কাউট সদস্যদের সেই আন্তরিকতা আমরা দেখতে পেয়েছি। কাজেই আমি চাই আমাদের দেশে এই স্কাউট আন্দোলন আরো ব্যাপকভাবে গড়ে উঠুক। দেশে স্কাউট আন্দোলন জোরদার করতে তার সরকারের উদ্যোগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্কাউটিং নতুন প্রজন্মকে নৈতিক এবং জীবনমানে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। আধুনিক, প্রগতিশীল, সৃজনশীল গুণাবলি বিকশিত হয়। ফলে স্কাউট সদস্যরা সেবার পথে দীক্ষিত হয়ে দেশেপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলছে। পরোপকারী হিসেবে সমাজসেবার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান এবং প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা কোভিডসহ বিভিন্ন সময়ে তারা আন্তরিকতা দেখিয়েছে।

hasina2

তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ স্কাউটিং ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৪৮ কোটি টাকা ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সিলেট অঞ্চলে মৌলভীবাজার জেলায় স্কাউট ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ৩৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আঞ্চলিক স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লালমাই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩৫৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্যাব স্কাউট সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাদ্রাসাগুলোতে যেন রোভার স্কাউট দল গঠন করা হয় সে বিষয়েও আমাদের কাজ করতে হবে।’

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশটা আরও চমৎকারভাবে গড়ে উঠুক। যেখানে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এগুলো স্থান পাবে না। সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত থাকবে। চট্টগ্রামের রোভার স্কাউটদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের লক্ষ্যে ১৮৮ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছি। বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২১৭ জেলা ও উপজেলায় স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আমরা নির্মাণ করে দেবো। আমাদের লক্ষ্য দেশে স্কাউটিং সম্প্রসারণের মাধ্যমে শিশু-কিশোর যুবদের আত্মনির্ভরশীল ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

hasina3

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ লাখ স্কাউট গড়ে তোলা হবে। আমার লক্ষ্যটা থাকবে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন প্রতিটা শিক্ষার্থী এই স্কাউট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়। সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্কাউটের সঙ্গে জড়িতদের। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরি আমাদের বাংলাদেশেই একদিন আমরা আয়োজন করতে পারবো। সেভাবে আমাদের উদ্যোগ এখন থেকে নিতে হবে। যেখানে সারা বিশ্বের লোকেরা আসবেন, কাজ করবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতা, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী, কবি-সাহিত্যিক, প্রশাসক, শিক্ষক, প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, যারা দেশের সেবা করছেন, তোমাদের (স্কাউট) মাঝ থেকেই সবাই উঠে আসবে।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব স্কাউটস জাম্বুরী ভবিষ্যতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ লক্ষে প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কাব স্কাউটসদের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ বিতরণ করেন এবং তাঁর নিজের স্বাক্ষরিত সনদপত্র ১২ জনের হাতে তুলে দেন।

নয়দিন ব্যাপী জাম্বুরীতে ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, স্কাউট চায়না (তাইওয়ান), থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং কানাডা থেকে ৮ হাজার স্কাউট, ১ হাজার ইউনিট নেতা এবং আন্তর্জাতিক পরিষেবা দলের সদস্যসহ মোট ১১ হাজার অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করে। সূত্র: বাসস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর