মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

লিটন-মুশফিকের রেকর্ড জুটি: ৮৮ রানের অসাধারণ এক সিরিজ জয়

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১১৩ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

লিটন-মুশফিকের রেকর্ড জুটিতে ৩০৬ রান কম কথা নয়। অথচ এমন স্কোরের পরও নিশ্চিন্ত থাকতে পারছিল না বাংলাদেশ। ৮৯ রানের জুটি গড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছিলেন রহমত শাহ-নাজিবুল্লাহ জাদরান। অবশ্য তাসকিনের আঘাতে এই জুটি ভাঙার পরেই মিলিয়ে গেছে সব শঙ্কা। তাতে লিটন-মুশফিকের গড়ে দেওয়া মঞ্চেই এলো ৮৮ রানের অসাধারণ এক জয়। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডেও জিতে নেওয়ায় এক ম্যাচ আগে নিশ্চিত করলো সিরিজ।

চট্টগ্রামে শুরুতেই আফগানদের চাপে ফেলে দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ৩৪ রানে তুলে নিতে পেরেছিল ৩ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতেও সফরকারীরা যে মাথা তুলতে পারবে, অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হচ্ছিল না। রহমত-নাজিবুল্লাহ জুটি পরে সেটিই করে দেখাচ্ছিলেন। দুজনের হাফসেঞ্চুরি আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছিল আফগান শিবিরের। কিন্তু ২৫তম ওভারে রহমতকে ফিরিয়ে ম্যাচের  নিয়ন্ত্রণ পুনরায় নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। তাসকিনের বলে বেলস পড়ে যাওয়া রহমত করেছেন ৫২ রান। জুটি ভাঙার পর সঙ্গী নাজিবুল্লাহও বেশি দূর যেতে পারেননি। তাসকিনের ২৯তম ওভারে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন তিনি। তাতে ৫৪ রানে ফিরতে হয়েছে নাজিবুল্লাহকে। আফগান ইনিংসের মূল আকর্ষণই ছিল ওই দুজনের ব্যাটিং। জুটিটা আগেই ভাঙা যেতো, যদি না ১৭তম ওভারে জাদরানের ক্যাচ মিস করতেন শরিফুল।

শেষ স্বীকৃত ‍জুটি হিসেবে রহমানুল্লাহ গুরবাজ কিংবা মোহাম্মদ নবী সেভাবে ঝলক দেখাতে পারেননি। বরং চাপের কাছে মাথা নত করেছেন। চোটের কারণে পরে নামা গুরবাজ তো সাকিবের বলে বোল্ড হয়েছেন। করেছেন মাত্র ৭ রান। নবী ৪০ বলে ৩২ রান করলেও ততক্ষণে দিশা হারিয়ে ফেলেছে আফগানদের ব্যাটিং। নবীকে আফিফের ক্যাচ বানান মিরাজ। রশিদ খান বেশ কিছু শটস খেলেছেন, কিন্তু বেশিক্ষণ সেটি চলতে দেননি মোস্তাফিজ। ২৯ রানে রশিদকে বোল্ড করেছেন। শেষ দিকে লেজ ছেঁটে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। দুই স্পিনার মুজিব, ফারুকিকে ফেরালে ৪৫.১ ওভারে ২১৮ রানেই শেষ হয়েছে আফগানিস্তানের ইনিংস। মূল জুটি ভেঙে দেওয়া তাসকিন ২১ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। ৩৮ রানে দুটি নেন সাকিব আল হাসানও। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, মেহেদী মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জেতার পর সাকিব-তামিম প্রত্যাশা মেটাতে না পারলেও আফগানদের সামলাতে লিটন-মুশফিক জুটিই ছিল যথেষ্ট। ব্যাটসম্যানরা যখন রুদ্ররূপী হয়ে ওঠেন, তখন বোলাররা যে কতটা অসহায় হয়ে পড়েন, তার স্পষ্ট উদাহরণ ছিল দ্বিতীয় ওয়ানডে। ইনিংসের মাঝপথে সাত বোলার ব্যবহার করেও লিটন দাস-মুশফিকুর রহিমকে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। বরং সফরকারীদের ওপর আগ্রাসন বাড়িয়ে রানের ফুল ফুটিয়েছেন দুই ব্যাটার। তৃতীয় উইকেটে তাদের রেকর্ড ‍জুটিতেই ৪ উইকেটে ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ২০২ রানের যে জুটি গড়ে দিয়েছে তিনশ’ রানের ভিত।

অবশ্য লিটনের ১৩৬ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটির অপমৃত্যু আগেই ঘটতে পারতো। তখন ৮৭ রানে ব্যাট করছিলেন। এই সময় কাভারে তার ক্যাচ ড্রপ না হলে পঞ্চম সেঞ্চুরি পাওয়া হয়তো হতো না। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল বলে সেঞ্চুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা যায়নি। বরং তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই বড় স্কোরের পেছনে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ।

একটা পর্যায়ে লিটন এতই আগ্রাসী হয়েছিলেন যে আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো স্কোর বোর্ড। কিন্তু ৪৭তম ওভারে ডিপ স্কয়ার লেগে লিটন ক্যাচ তুলে দিলে সেখানেই শেষ হয় বাড়তি রানের সম্ভাবনা। কারণ, তার ফেরার পরের বলে ফিরেছেন আরেক সেট ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। ৮৬ রানে ক্রিজে থাকা এই ব্যাটার ক্যাচ তুলে ফিরেছেন। ৯৩ বলে ফেরা মুশফিকের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। তার আগে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি পাওয়া লিটন ১২৬ বলে ফিরেছেন ১৩৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে। তাতে ছিল ১৬টি চারের সঙ্গে ২টি চারের মার। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। এই দুজন ফেরার পর আফিফ-মাহমুদউল্লাহ সেভাবে রান তুলতে পারেননি। আফিফ অপরাজিত ছিলেন ১৩ রানে, মাহমুদউল্লাহ ৬ রানে। ফরিদ আহমেদ ৫৬ রানে নিয়েছেন দুটি উইকেট। একটি করে শিকার ফজল হক ফারুকি ও রশিদ খানের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর