লাঞ্চের আগেই অলআউট বাংলাদেশ
লাঞ্চের আগেই অলআউট বাংলাদেশ। শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিনে ৭৭ রান যোগ করে প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হকরা অলআউট হয়েছে ৩৩০ রানে। প্রথম দিনের দুই সেশন যেভাবে কেটেছিল, তাতে দারুণ কিছুর পূর্বাভাস ছিল দ্বিতীয় দিনে। কিন্তু ঘটলো ঠিক উল্টোটা।
আজ চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। প্রথম সেশনেই গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। এরপরই লাঞ্চ বিরতিতে গেছে দুই দল। দিনের দ্বিতীয় ওভারে ১১৪ লিটন দাসের বিদায়ের পর আর জুটি গড়া হয়নি। মুশফিকুর রহিম সেঞ্চুরির পথে হাঁটলেও আউট হয়েছেন ৯১ রানে। ইয়াসির আলী (৪) স্মরণীয় করতে পারেননি অভিষেক ইনিংস। যদিও দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে সঙ্গীর অভাবে আসলে তার কিছুই করার ছিল না। এই ব্যাটার ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। তাইজুল ইসলাম ১১ ও আবু জায়েদ রাহী ৮ রান করেছেন। আর এবাদত হোসেন প্রথম বলেই আউট হয়ে যাওয়ায় শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই বাংলাদেশকে চেপে ধরেছিলেন হাসান আলী। পাকিস্তানি এই পেসার টেস্ট ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবার পেয়েছেন ৫ উইকেটের দেখা। ২০.৪ ওভারে ৫১ রান দিয়ে বাংলাদেশের পাঁচ ব্যাটারকে আউট করেছেন। ফাহিম আশরাফ ৫৪ রান খরচায় পেয়েছেন ২ উইকেট। তার সমান উইকেট নিতে শাহীন আফ্রিদি দিয়েছেন ৭০ রান। আর ৭৯ রানে একটি উইকেট নিয়েছেন সাজিদ খান।
দিনের শুরুতেই লিটনের বিদায়
প্রথম দিনের প্রথম সেশন বাদ দিলে পুরোটা সময় ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য। লিটন দাস পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই ব্যাটার দ্বিতীয় দিনে কতদূর যেতে পারেন, সেটাই ছিল জানার আগ্রহ। যদিও বেশি দূর যেতে পারেননি, দিনের শুরুতেই ফিরে গেছেন এই উইকেটকিপার।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় লিটনের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। চাপের বোঝা মাথায় চেপে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে সমালোচকদের সবকিছুর জবাব দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনের সময় চমৎকার ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। দারুণ একদিন পার করে দ্বিতীয় দিনে নিজেকে আরও এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু হাসান আলীর বলে ১১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে।
অর্থাৎ, দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে গেছেন লিটন। হাসানের বলে জোরালো এলবিডব্লিউয়ের আবেদন উঠলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। পাকিস্তান নেয় রিভিউ। সেখানেই শেষ হয়ে যায় লিটনের ইনিংস। দেখা মেলে বল উইকেটে আঘাত করেছে। ২৩৩ বলের চৎকার ইনিংসটি ডানহাতি ব্যাটার সাজিয়েছেন ১১ চার ও ১ ছক্কায়। তার বিদায়ে মুশফিকের সঙ্গে ভাঙে ২০৬ রানের জুটি।
অভিষেক ইনিংস স্মরণীয় হলো না ইয়াসিরের
অনেক অপেক্ষার পর টেস্টে অভিষেক হয়েছে ইয়াসির আলীর। যদিও চট্টগ্রামের অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসটা স্মরণীয় করতে পারলেন না এই ব্যাটার। এক বাউন্ডারি মেরেই আউট হয়েছেন তিনি।
টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন অনেক আগেই। কিন্তু একাদশে থাকার সুযোগ মেলেনি। বেশ কয়েক ম্যাচে বদলি হয়ে ফিল্ডিং করলেও মূল খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামতে না পারায় আক্ষেপ কেবল দীর্ঘই হচ্ছিল। অবশেষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে অভিষেক হয়েছে ইয়াসিরের। কিন্তু টেস্ট আঙিনায় পা রাখাটা মোটেও সুখের হলো না। মাত্র ৪ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।
হাসান আলীর শিকার এই তরুণ ব্যাটার। পাকিস্তানি পেসারের ইনসুইঙ্গারে ঘায়েল তিনি। বল সরাসরি আঘাত করে স্টাম্পে। অভিষেক ইনিংসে ১৯ বল মোকাবিলা করেছেন ইয়াসির।
সেঞ্চুরি হলো না মুশফিকের
লিটন দাস আগের দিন পূরণ করেছিলেন শতক। জুটি বেঁধে মুশফিকুর রহিমও হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু হলো না। তীরে গিয়ে তরী ডুবলো! নার্ভাস নাইনটিনের শিকার হয়ে আউট হয়ে গেছেন মুশফিক।
৯১ রানে আউট হয়েছেন মুশফিক। ৮২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে সেঞ্চুরির পথে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। অন্যপ্রান্তে উইকেট হারালেও নিজের পথে অবিচল ছিলেন এই ব্যাটার। কিন্তু সেঞ্চুরি পেলেন না। ফাহিম আশরাফের বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি।
আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দিলেও রিভিউ নিয়েছিলেন মুশফিক। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। ফলে ১১ বাউন্ডারিতে সাজানো ২২৫ বলের ইনিংসে সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।