রাজনীতির টোকাইদের নিয়ে জোট করেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতিতে যেসব দলের কোনো খবর নেই, নাম নেই, ঠিকানা নেই, সভাপতি আছে সম্পাদক নেই বা সম্পাদক আছে সভাপতি নেই, সেসব রাজনীতির টোকাইদের নিয়ে জোট করেছে বিএনপি।
শনিবার বিকেলে রংপুর শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রধান বক্তা, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া ও অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম বিশেষ অতিথি, রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শাহাদত হোসেন বকুলসহ স্থানীয় নেতারা আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম-অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে জোট করে মাত্র ছয়টি আসন পাওয়া বিএনপি এবার তাদের সেই ২২ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে করলো ১২ দলীয় জোট। তারপর নামসর্বস্ব রাজনীতির ‘টোকাই’দের নিয়ে করেছে ৩৪ দলীয় জোট। আর ঢাকায় সামনে ৩৪ দলীয় জোটের ২৪ জন, মঞ্চে ১৬ জন নেতা আর ১০০ জন সাংবাদিক- এ হচ্ছে তাদের সভা-সমাবেশ। তাদের যে নির্বাচনে কোনো সম্ভাবনা নেই, সেটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়া লাগে না।
গত ডিসেম্বরে বিএনপির ৬ সংসদ সদস্যের পদত্যাগের পর বিএনপি থেকে বেরিয়ে এসে ১ ফেব্রুয়ারির উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র অংশ নিয়ে পুনরায় এমপি নির্বাচিত হওয়া উকিল আব্দুস সাত্তারের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বিএনপির উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন, শতশত উকিল আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে নির্বাচন অংশগ্রহণ করার জন্য। তখন আর কম্বলের মধ্যে লোম খুঁজলে পাবেন না।
ড. হাছান বলেন, সমগ্র দেশে বিএনপি আবার আগুন সন্ত্রাসী-সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়েছে। ২০১৩-১৪-১৫ সালে যারা বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে, ট্রাকে আগুন দিয়েছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তারা আবার মাঠে নেমেছে। রংপুরের মানুষের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমা থেকে ফেরার পথে এ রংপুরেরও একজন মানুষকে তারা পুড়িয়ে হত্যা করেছে। রংপুরে ট্রাকে আগুন দিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে রাতে ঘুমন্ত ট্রাক চালককে তারা পুড়িয়ে অঙ্গার করে ফেলেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে তারা শতশত নির্বাচনী কেন্দ্র স্কুলঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, সেখানে পুড়ে ছারখার হয়ে যাওয়া বইয়ের পোড়া টুকরো বুকে চেপে শিশুরা বিলাপ করেছে, সেই তারা আবার মাঠে নেমেছে, সে কারণেই আমরা শান্তি সমাবেশ দিয়েছি। বিএনপি বিষধর সাপ, তারা এখন পদযাত্রার নামে দম নিচ্ছে, সুযোগ পেলেই ছোবল দেবে। এর নমুনাও পেয়েছি। সিরাজগঞ্জ ও অন্যান্য জেলায় তাদের পদযাত্রা থেকে আমাদের সমাবেশের ওপর হামলা, পিস্তল উচিয়ে সন্ত্রাসী তাণ্ডব আমরা দেখেছি। তারা আমাদের শান্তি সমাবেশের কারণ জিজ্ঞেস করে। অথচ তারা অশান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করে বলেই আমাদের শান্তি সমাবেশ।
এ সময় রংপুরের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার ১০ বছর, এরশাদ সাহেবের সাড়ে ৯ বছরে রংপুর ‘বিভাগ’ হয়নি, জননেত্রী শেখ হাসিনা রংপুরকে বিভাগ বানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন বানিয়েছেন, ঢাকা সংযোগ মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত হয়েছে, যেখানে দেশের অর্থনীতির লাইফ-লাইন ঢাকা-চট্রগ্রাম সড়কও এখন চার লেন।