মেশিনে চাল পলিশিং করা প্রতারণা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, মেশিনে চাল পলিশিং করে আকর্ষণীয় করে মিল মালিকরা প্রতারণা করছে। চাল পলিশিং করে মিলগুলো চালকে চিকন করে। এতে অনেক পুষ্টিগুণ চাল থেকে চলে যায়। চালের জাতের উপর গুরুত্ব না দিয়ে মিলগুলো নিজেদের মতো ব্র্যান্ড দাঁড় করিয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। একটি অগ্রসরমান অর্থনীতিতে এমন প্রতারণা মানা যায় না। এটা আইন করে বন্ধ করা উচিত।
শনিবার একটি গণমাধ্যম আয়োজিত “বায়োফর্টিফায়েড জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধানের বাজার সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সাবেক কৃষি সচিব ও কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, গেইন বাংলাদেশে কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার, সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন, হারভেস্ট প্লাসের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. খায়রুল বাশার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি বিপণন অধিদফতরে সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ, বণিক বার্তা সম্পাদক ও প্রকাশক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, খাদ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক এ কে এম নুরুল আফসার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) সাবেক মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, নাবিল গ্রুপের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা অনুপ কুমার সাহা, প্রাণ গ্রুপের বঙ্গ মিলারস লিমিটেড নির্বাহী পরিচালক নাসের আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের প্রধান নির্বাহী শাকিব কোরেশী।
ড. শামসুল আলম বলেন, পুষ্টির ঘাটতি রোধে সরকারের বড় বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে। শুধু চালের মাধ্যমে জিঙ্ক সরবরাহ করা যাবে এমন নয়। তবে যেহেতু দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল সেহেতু চালের মাধ্যমেই জিঙ্ক সরবারহ করা সহজ। চালের মাধ্যমে এ উপাদানের সরবরাহ যথাযথ। আইন করে যেমন লবণে আয়োডিন এবং তেলে ভিটামিন থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তেমনি চালের ক্ষেত্রেও আইন করা দরকার। কেউ প্রতারণা করে চালের যেমন ইচ্ছা তেমন রূপ দেবে এমনটি হতে পারে না।
মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভুটানসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ জিঙ্ক সমৃদ্ধ চাল নিতে চায়। কিন্তু আমরা সেটি দিতে পারছি না। তাই ধানের জাত উদ্ভাবনের পর জনপ্রিয়করণ করতে ১৫-১৬ বছর সময় লাগে সেটি কমিয়ে আনতে হবে। আবার ধানের নাম সংখ্যাগতভাবে না দিয়ে অন্য কোনওভাবে দিয়ে জনপ্রিয় করা যায় কিনা সেটি ভাবতে হবে। বিশেষ করে ব্রি-ধান ৭৪ ও ৮৪ জাত অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ। এই জাত জিঙ্গ চাল নামে জনপ্রিয় করা যায় কিনা দেখা যেতে পারে।
ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, দেশের সব ধানের জাতেই কম বেশি জিঙ্গ রয়েছে। তবে ব্রি ধান-৭৪ এবং ব্রি ধান-৮৪ জাত দুটি জনপ্রিয় করা সম্ভব হলে দেশের মানুষের জিঙ্কের ঘাটতি অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব। এজন্য একটি অ্যাকশন প্লান ও সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে অগ্রসর হতে হবে।