মেট্রোরেল ও নগর পরিবহনে চলাচল জন্য একই কার্ড
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, মেট্রোরেলের এমআরটি পাসের সঙ্গে সমন্বয় করেই ঢাকা নগর পরিবহনের নতুন দুই যাত্রাপথ (২৪ ও ২৫ নম্বর) চালু করা হবে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস-রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৬তম সভা শেষে তিনি এ তথ্য জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক, দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র তাপস বলেন, ইতোমধ্যে এমআরটি চালু হয়েছে। তাই এমআরটির সাথে সমন্বয় করে আমরা নতুন দুটি যাত্রাপথ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই প্রেক্ষিতে নতুন দুটি যাত্রাপথের ব্যাপারে সভায় আমরা বিশদ আলোচনা-পর্যালোচনা করেছি। এ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু ব্যত্যয় আমরা লক্ষ করেছি। বিশেষ করে টিকিট না কেটে বাসে ওঠার একটা প্রবণতা আমরা লক্ষ করছি। সেটা কোনোভাবেই ঢাকা নগর পরিবহনে বরদাশত করা হবে না। সবাইকে টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে টিকিট কেটে বাসে ওঠতে হবে। ২২ নম্বর যাত্রাপথ যারা পরিচালনা করছে, তাদের আমরা কঠোরভাবে নির্দেশনা দেব; তারা যেন গাড়িচালকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে যান। আমাদের যে নিয়ম, যাত্রী ছাউনি থেকে টিকিট কিনেই যেন যাত্রীরা বাসে উঠেন। সে অনুযায়ী নগর পরিবহন যাত্রীদের সেবা দেবে। সেটা আজকের এই সভা থেকে আমরা কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি।
নগর পরিবহনে যাত্রী সেবার মান অক্ষুণ্ন রাখা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র বলেন, আমরা এ বিষয়ে আলাপ করেছি। বিআরটিসি আমাদের নিশ্চিত করেছে, ঢাকা নগর পরিবহনের জন্য যে নির্দিষ্ট বাস, সেটা শুধু নগর পরিবহনের যাত্রাপথেই চলবে। এই বাসগুলো অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। আর ট্রান্স সিলভাকে আমরা কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেবো। সেজন্য তাদের ১৫ দিন সময় দেবো। তারা যদি নির্ধারিত নীতিমালা-নিয়ম অনুযায়ী এই সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বা ব্যর্থ হয়, তাহলে চুক্তি বাতিল করব। বিআরটিসি যদি রাজি হয় তাহলে বিকল্প হিসেবে তাদের দ্বারাই পরিচালিত হবে। অথবা নতুন উদ্যোক্তা নিয়ে আমরা এই সেবাটা পরিচালনা করব।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, মেট্রোরেলে যাত্রীরা যে র্যাপিড পাস নিয়ে চলাচল করছে, সেটা দিয়েই নগর পরিবহনের সব বাসে চলতে পারবেন; এমন সিদ্ধান্তই হয়েছে আজকের মিটিংয়ে। একটি কার্ডেই নগরবাসী মেট্রোরেল ও ঢাকা নগর পরিবহনে চলতে পারবেন।
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, মেট্রোরেলের যাত্রীদের সার্ভিস দেওয়ার জন্য আমরা ২৪ ও ২৫ নম্বর যাত্রাপথ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা যেন বাস থেকে নেমে মেট্রোরেলে উঠতে পারেন এবং মেট্রোরেল থেকে নেমে বাস ব্যবহার করতে পারেন, সেটা বিবেচনা করেই নতুন এই দুই রুট চালু করা হবে। এই দুই রুটে প্রাথমিকভাবে ৫০টি বাস চলবে।
২৪ নম্বর যাত্রাপথের গতিপথ
ঘাটারচর-বসিলা-মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড-শিশুমেলা-আগারগাঁও-মিরপুর ১০ দিয়ে কালসি ফ্লাইওভার হয়ে এয়ারপোর্ট-জসিমউদ্দীন আব্দুল্লাহপুর।
২৫ নম্বর যাত্রাপথ
ঘাটারচর-বসিলা-মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড-আসাদগেট-মানিক মিয়া এভিনিউ দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে বিজয় সরণি দিয়ে বের হয়ে জাহাঙ্গীর গেট-শাহিন স্কুল-মহাখালী (নিচ দিয়ে, ফ্লাইওভার হয়ে নয়)-কাকলি-বনানী উড়ালসেতু হয়ে রিজেন্সি-এয়ারপোর্ট-জসিমউদ্দীন-আব্দুল্লাহপুর।