মিরপুরের কালশী ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক হাজার ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্পন্ন কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধনের ফলে মিরপুর থেকে বিমানবন্দর এলাকায় ১০ থেকে ১৫ মিনিটেই যাওয়া যাবে। মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, মহাখালী ও রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
রবিবার সকালে কালশী বালুর মাঠে এক সুধী সমাবেশে তিনি ২.৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ফ্লাইওভারের ফলক উন্মোচন করেন।স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই ফ্লাইওভারটি নির্ধারিত সময়ের চার মাস আগেই কাজ শেষ করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি প্রকল্পটি অনুমোদন করে সরকার। নির্মাণের সময়কাল নির্ধারিত ছিল আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। ফ্লাইওভারটি আজ থেকেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
কালশী ফ্লাইওভার চালু হলে মিরপুরবাসী যান ও জলজটমুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কালশী ফ্লাইওভার মিরপুরবাসীর জন্য বসন্তের উপহার। ফ্লাইওভারটি চালুর পর প্রতিদিনের যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন মিরপুরের বাসিন্দারা।
কর্তৃপক্ষ বলছে, ইসিবি চত্বর থেকে সরাসরি এ উড়ালপথ ধরে চলে যাওয়া যাবে পল্লবী কিংবা মিরপুরে। মূল ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার। ৪৭৫ মিটারের র্যাম্প রয়েছে পাঁচটি। ৬৮টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ উড়ালসড়কের গার্ডারের সংখ্যা ১৭টি। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে সমান তালে চলতে তৈরি হয়েছে সড়ক। ৩৭ দশমিক ২ মিটার প্রস্থ ও প্রায় চার কিলোমিটারের এ সড়ক চালুর কারণে যানজট অনেক কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রধান চার লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি ইসিবি স্কোয়ার থেকে কালশী ও মিরপুরের ডিওএইচএস হয়ে গেছে। দুই লেন বিশিষ্ট র্যাম্পটি কালশী মোড় থেকে শুরু হয়ে কালশী সড়কে যাবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) অফিস জানায়, প্রকল্পটির আওতায় একটি পিসি গ্রিডার ব্রিজ, দুটি ফুল ওভার ব্রিজ, একটি পাবলিক টয়লেট, দুটি পুলিশ বক্স, একটি ৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন, একটি ১৭৫৫ মিটার আরসিসি পাইপ ড্রেন, ৩৩৮৩ মিটার যোগাযোগ তার, পৃথক সাইকেল লেন ও ছয়টি বাস বে নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকল্প বিবরণী অনুযায়ী, ফ্লাইওভারটি ইংরেজি ‘ওয়াই’ অক্ষরের মতো। এই প্রকল্পে যাত্রীদের ভ্রমণ সহজ করার লক্ষ্যে আগের চার লেন বিশিষ্ট রাস্তাগুলোকে ছয় লেন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে এক হাজার ১২ কোটি টাকা।