পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর চলতি সপ্তাহে পদত্যাগ করেছিলেন মুহিইদ্দিন। শুক্রবার ঊর্ধ্বতন অন্যান্য মালয় শাসকদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাবরিকে নবম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগের আদেশ দেন রাজা।
শনিবার রাজধানী কুয়ালা লামপুরের রাজপ্রাসাদে সাবরি শপথ নেবেন। বৃহস্পতিবারেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর পরবর্তী সরকার গঠনের অপেক্ষায় ছিলেন সাবরি। গত সোমবার যে জোট সরকারের পতন হয়েছে সেই সরকারের এমপি’দেরই সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
মালয়েশিয়ার রাজার প্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২২২ আসনের পার্লামেন্টে ১১৪ জনের সমর্থন পেয়ে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছেন ৬১ বছর বয়সী ইসমাইল সাবরি।
মালয়েশিয়ায় কোভিড-১৯ মহামারী এবং অর্থনৈতিক দুর্দশা সামাল দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জনরোষ বাড়তে থাকার এই সময়ে দেশের শাসনক্ষমতায় আসলেন সাবরি।
এর আগে তার পূর্বসরি মুহিইদ্দিন ইয়াসিনকে মাত্র ১৭ মাসের নড়বড়ে সরকার নিয়েই কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি আর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় লড়তে হচ্ছিল। তারপরও আস্থা ভোটে টিকে থাকার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত ১৩ অগাস্টেই মুহিউদ্দিন ইয়াসিন প্রথমবারের মত স্বীকার করে নেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন তার পক্ষে নেই।
এখন তার জায়গায় নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ইসমাইল সাবরির নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ায় তিন বছর পর আবারও মালয়েশিয়ার শাসন ক্ষমতায় এল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (ইউএমএনও) পার্টি, যাকে বলা হয় মালয়েশিয়ার ‘প্রাচীনতম দল’।
ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ বিশেষ করে, ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ (ওয়ানএমডিবি) বিনিয়োগ তহবিলের মতো কোটি কোটি ডলারের কেলেঙ্কারির জেরে তিন বছর আগে সাধারণ নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল দলটি।
তার আগ পর্যন্ত ৬০ বছর ধরে মালয়েশিয়ার শাসন ক্ষমতায় ছিল ইউএমএনও পার্টি। মুহিইদ্দিনের জোট সরকারেরও অংশ ছিল তারা। তিন বছর আগের ওই নির্বাচনের পর মালয়েশিয়ায় এ পর্যন্ত দুটি সরকার এসেছে। কিন্তু দুই সরকারই নড়বড়ে এবং ক্ষণস্থায়ী হয়েছে। ২০১৮’র নির্বাচনের পর গত তিন বছরে এবার নিয়ে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী পেল মালয়েশিয়া।
রাজপ্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অবিলম্বে রাজনৈতিক সংকটের সমাপ্তি হবে এবং পার্লামেন্ট সদস্যরা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডাকে এক পাশে রাখবে বলে রাজা আশা করেন…এ সময়ে মানুষের ঘাড়ে আর অনির্দিষ্টকালের রাজনৈতিক সংকটের বোঝা চাপানো উচিত হবে না।”