বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না। যারা বলছেন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করছেন।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের অন্তর্গত ইউনিটগুলোর নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এ পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি প্রমুখ। সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৮০২টি ইউনিটের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের শপথ বাক্য পাঠ করান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
যারা বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে বলছেন—তারা হয় না জেনে বলছেন, না হয় উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করছেন—উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট উন্মুক্ত নয়, শ্রীলঙ্কার মতো কেউ ইচ্ছা করলে বিদেশে ডলার পাঠাতে পারবে না। শিক্ষা, চিকিৎসা যে কোনও কাজে বিদেশে টাকা পাঠাতে হলে অ্যাকাউন্ট ওপেন করে তারপর পাঠাতে হবে। অনেকে মেগা প্রকল্পের কথা বলেন—পদ্মা সেতু বিদেশি ঋণনির্ভর নয়। আমাদের টাকায় শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করছেন, বিদেশি ঋণ নয়। কোনও বিদেশি ঋণ নিয়ে এত বড় মেগা প্রকল্প হয় না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা সারা বিশ্বকে দেখিয়েছেন আমরা পারি। শ্রীলঙ্কার বেশির ভাগ ঋণ অল্প সময়ে, কঠিন শর্তে, অধিকতর সুদের হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে। আমাদের অধিকাংশ ঋণ দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধ করতে হচ্ছে। আকাশচুম্বী আজকের বাংলাদেশের অবস্থা। আজকে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের পর এখন তারা লেগেছে বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে। করোনার সংকট কাটিয়ে আজ তৃণমূল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি ভারসাম্যপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশের কোথাও তেমন কোনও সংকট হয়নি। তাই আমি অপপ্রচারকারীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অপপ্রচার করে লাভ নেই। বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না।
কাদের বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল—নিয়ে অপপ্রচার করে অগ্রযাত্রা থামানো যায়নি। এখন অপ্রচার করতে গিয়ে অনেকে শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে। বলছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো হবে। রোজার আগে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গিয়েছিলো এখন সেটা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ কখনও ঋণ খেলাপি হয়নি। শ্রীলঙ্কার জাতীয় আয়ের তুলনায় ঋণের অনুপাত শতকরা ৬১ ভাগ। আর আমাদের ঋণের অনুপাত শতকরা ১৪ ভাগ। করোনার সংকট কাটিয়ে এ বছর আমাদের রফতানি আয় রেকর্ড অতিক্রম করতে যাচ্ছে। আমাদের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে স্থিতিশীল। শ্রীলঙ্কার ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার। আর আমাদের রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার, বিশাল পরিমাণ রিজার্ভ। শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে এই অগ্রসরমান বাংলাদেশই থাকবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাই থাকবে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয়ের বন্দরে ইনশাআল্লাহ পৌঁছাতে পারবো। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবে।