মাদকের সাম্প্রতিক সাতটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব শুক্রবার হাতে পাওয়ার পর আসামিদের মধ্যে পরীমনি, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মরিয়ম আক্তার মৌ, চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকে এরই মধ্যে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)।
সিআইডি অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক রোববার অনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। এসব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরীমনিসহ গ্রেপ্তারকৃতদের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ব্যাংকের এমন কিছু কর্মকর্তার নাম গণমাধ্যমে আসছে- এগুলো যাচাই করা হচ্ছে।
“আমরা তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পেশার অনেকের নাম পেয়েছি। কেউ শত্রুতাবশতও দিতে পারে। সিআইডি এগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করবে। কোনো নিরীহ মানুষ যেন দোষী না হয় সিআইডি এটা দেখছে।“
তদন্তভার পেয়ে এই চার আসামি ছাড়াও হেলেনা জাহাঙ্গীর ও শরিফুল হাসান মিশুর বাসায় শনিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একযোগে তল্লাশি চলে।
ওমর ফারুক বলেন, এসব বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস, পাসপোর্ট, মোবাইল, ল্যাপটপ এবং পরীমনির বাসা থেকে একটি ফেরারী গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে এদের সবার বাড়িতে অভিযান চালিয়েই গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব ও পুলিশ। তখন বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের কথা জানিয়ে মামলা হয়। নানা নাটকীয়তার পর সেই মামলাগুলোর তদন্ত করছে সিআইডি।
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, “পরীমনি ও পিয়াসাদের দ্বারা ব্ল্যাকমেইলের কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে। তাদের সহযোগী এবং ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার হয়েছে এমন কিছু নাম পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।”
তবে পরীমনির সঙ্গে সম্পর্কিত হিসেবে নাম আসা গোয়েন্দা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা যেসব মামলার দায়িত্ব পেয়েছি, সেগুলো মাদক সংক্রান্ত। তদন্তে অন্য বিষয়ে তথ্য বা অভিযোগ আসলে বা থেকে থাকলেও আমরা আমলে নেব।”
শনিবার তল্লাশি চালিয়ে যেসব ডিভাইস পাওয়া পাওয়া গেছে সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে বলেও সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জানান।
আওয়ামী লীগে পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ২৯ জুলাই তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দুটি ও পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়। এর মধ্যে দুটি মাদকের মামলা রয়েছে।
পরদিন গোয়েন্দা পুলিশ কথিত দুই মডেল পিয়াসা ও মৌকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও গুলশান থানায় মাদকের মামলা হয়।
এরপর র্যাব গত মঙ্গলবার ‘ডিজে পার্টি’ আয়োজনের আড়ালে অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শরিফুল হাসান ওরফে মিশুকে গ্রেপ্তার করে।
পরদিন পরীমনি ও রাজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক মামলা ছাড়াও রাজের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলা হয়।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমনি, পিয়াসা, মৌ, রাজ ও মিশুর বিরুদ্ধে একটি করে মামলা এবং হেলেনার বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার তদন্তভার এখন সিআইডির কাছে।