নতুন ১৫৫টি আইএসপি লাইসেন্স দিচ্ছে সরকার

সরকার বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা ক্যাটাগরিতে আরও ১৫৫টি আইএসপি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) লাইসেন্স দিচ্ছে। বিভাগীয় ক্যাটাগরিতে চারটি, জেলা ক্যাটাগরিতে ৩০টি এবং উপজেলা বা থানা ক্যাটাগরিতে ১২১টি নতুন লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি দেড় শতাধিক আইএসপি লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগোযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, লাইসেন্স দেওয়া তো বন্ধ ছিল না। আবেদন জমা পড়েছিল। যেগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে, যাদের সক্ষমতা আছে তারা যোগ্যতা অনুযায়ী লাইসেন্স পাবে।
প্রসঙ্গত, দেশে চার ক্যাটাগরিতে ২ হাজারের বেশি আইএসপি লাইসেন্স রয়েছে। নেশনওয়াইড, বিভাগীয় পর্যায়ে, জেলা ও থানা পর্যায়ে আইএসপি অপারেটররা সেবা দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে লাইসেন্সবিহীন অপারেটরের সংখ্যা লাইসেন্সড অপারেটরের দ্বিগুণ।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, দেশের ইন্টারনেট বাজার, সক্ষমতার পরিসর ছোট। তার ওপরে রয়েছে বৈধ, অবৈধ মিলিয়ে ৬ হাজারের বেশি আইএসপি। লাইসেন্সধারীদেরই ব্যবসা করে টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। তারওপর নতুন লাইসেন্স এ খাতে আরও চাপ বাড়াবে। কোথায় আইএসপি একেবারেই নেই সেই জায়গাগুলো খুঁজে বের করে চিহ্নিত করতে হবে। তারা আরও বলেন, দেশে ইন্টারনেটের বাজার বড় করতে পারলে তা এই খাতের জন্যই মঙ্গলজনক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, আমি মনে করি যেসব লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে সেটাই অনেক বেশি। যারা বর্তমানে অপারেশনে আছে, নেশনওয়াইড সেবা দিচ্ছে তাদের আরও সুযোগ দেওয়া উচিত। লাইসেন্সপ্রাপ্ত যারা আছে তারাই তো এখন ব্যবসা করতে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের ট্রান্সমিশন স্বল্পতা রয়েছে। এই স্বল্পতা কাটিয়ে উঠে যদি আমাদের নেশনওয়াইড আইএসপিগুলোকে বলা হয় তুমি রোল-আউট অবলিগেশন মেনটেইন করো, বিভাগীয় আইএসপিগুলোর মধ্যে যারা সক্ষম তাদের যদি হালনাগাদ করা হয় সেটাই মনে হয় যথেষ্ট। নতুন করে আমার মনে হয় না নেশওয়াইড বা ডিভিশনাল লাইসেন্স নিয়ে সেবার মাঠে আসার প্রয়োজন আছে। তবে তিনি মনে করেন বিভিন্ন থানায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখতে হবে সেখানে লাইসেন্স কয়টা আছে। একটা থানায় যদি ২০টা লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা সংখ্যা অনেক বেশি হবে। তখন দেখা যাবে নিজেদের মধ্যে মারামারি কাটাকাটি হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, এমনিতেই দুই হাজারের বেশি আমাদের মেম্বার (সদস্য প্রতিষ্ঠান)। এটা এখন প্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন। এরপরে যদি আরও লাইসেন্স দেওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে আমাদের আসল কাজ যে সেবাটা দেওয়া সেটা কঠিন হয়ে যাবে। এত সদস্য এই খাতে ব্যবসা করতে পারবে না। সেবার মান খারাপ হয়ে যাবে। আমি যদি বিজনেসই করতে না পারি তখন দেখা যাবে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খারাপ হচ্ছে, আমি নজর দেব না।
সরকারকে দেখতে হবে যেখানে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে তা বাজারে কয়টা আছে, মার্কেটের সাইজ কেমন। যে জায়গায় দেওয়া হচ্ছে সেখানে আসলে কোনও উপকার হবে কিনা। নাকি নতুন একটা মাসল পাওয়ার (পেশি শক্তি) সেখানে অ্যাড করলাম। তিনি এই খাতে পেশিশক্তির দাপট ও রাজনৈতিক ছত্রছায়াকে নেতিবাচক ও উৎপাত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এদের দাপটে আইএসপিগুলো সব জায়গায় ঢুকতে পারে না। এটা দূর করতে হবে। এ বিষয়ে তিনি সরকারকে বিশেষ নজরদারির আহ্বান জানান।