পানশিরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যেই তালেবান টালমাটাল অর্থনীতিতে ধুঁকতে থাকা আফগানিস্তানের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে।
তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বারাদারের সঙ্গে নতুন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তালেবানের আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাইকেও দেখা যাবে বলে তালেবানের তিনটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
“সব শীর্ষ নেতারা কাবুলে এসে পৌঁছেছেন, নতুন সরকারের ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তালেবান এক কর্মকর্তা।
কট্টরপন্থি ইসলামী গোষ্ঠীটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদা ইসলামের কাঠামোর মধ্যে ধর্মীয় বিষয়াদি ও শাসন ব্যবস্থা দেখভাল করবেন, বলেছে তালেবানের আরেকটি সূত্র।
ঝড়ের বেগে একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী দখলের পর গত মাসের ১৫ তারিখে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবানকে এখন রাজধানীর উত্তরে অবস্থিত পানশিরে বিদ্রোহীদের তুমুল প্রতিরোধ মোকাবেল করতে হচ্ছে।
লড়াইয়ে দুই পক্ষই প্রতিপক্ষের ব্যাপক হতাহত হয়েছে বলে দাবি করছে।
আঞ্চলিক মিলিশিয়া বাহিনীর কয়েক হাজার যোদ্ধা ও আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর অবশিষ্টাংশ আহমাদ মাসুদের নেতৃত্ব তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আহমাদ সাবেক মুজাহেদিন কমান্ডার আহমাদ শাহ মাসুদের ছেলে।
দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার একটি প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর জন্য উভয়পক্ষ একে অপরকে দোষারোপও করেছে।
কাবুল দখলের পর তালেবান অনেক নেতা ‘সবাইকে নিয়ে’ একটি সরকার গঠনের পরিকল্পনার কথা জানালেও শেষ পর্যন্ত নতুন অন্তর্বর্তী সরকারে কেবল নিজেদের লোকজনকে রাখারই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে।
নতুন সরকারে ২৫টি মন্ত্রণালয় ও ১২ সদস্যের একটি শুরা কাউন্সিলও থাকছে, জানিয়েছে সূত্রটি।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে লয়া জিরগা বা জাতীয় পরিষদের সভা করারও পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেখানে আফগান সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধি ও বয়সীদের নিয়ে নতুন সংবিধান ও ভবিষ্যৎ সরকার কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভা দ্রুত হবে বলে তালেবানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা আশাবাদ জানালেও ঠিক কখন এটি চূড়ান্ত হবে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।
কেউ কেউ বলছেন মন্ত্রিসভা শুক্রবারই চূড়ান্ত হবে, আবার কারও ধারণা কাকে কোন মন্ত্রণালয় দেওয়া হবে তা ঠিক করতে করতে আগামী সপ্তাহ হয়ে যেতে পারে।