জলবায়ু ঝুঁকির দেশগুলোতে অর্থায়নে জোরালো ভূমিকা চান স্পিকার

জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে অর্থায়নে সংসদ সদস্যদের জোরালো ভূমিকা চেয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন সারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশসহ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশসগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়েস্টমিনস্টারে সংসদ সদস্যদের আরও সোচ্চার হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় এড়াতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা দূরীকরণে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্র ও সুশাসন শক্তিশালীকরণ, এজেন্ডা ২০৩০, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ওপর জোর দেন স্পিকার।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ রাইজিং’ শীর্ষক ইন্টারেক্টিভ সংলাপে স্পিকার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় ইন্টারেক্টিভ সংলাপে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশ এর ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড শেখ অব কর্নহিল, হাউজ অব লর্ডস কমিটি অন এসএমই এর সদস্য লর্ড ইভান্স অব ওয়াটফোর্ড, ছায়া মুখপাত্র (সমতা ও নারী বিষয়ক) ব্যারনেস থর্নটন, হাউজ অব লর্ডসে প্রথম ব্রিটিশ বাংলাদেশি পিয়ার ব্যারনেস মানজিলা পলা উদ্দীন, সিপিএ-এর সেক্রেটারি জেনারেল স্টিফেন টুইগ, সাবেক পরিবহন ছায়ামন্ত্রী স্যাম ট্যারি, ব্রিটিশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এম এ কামাল বিল্লাহ অংশগ্রহণ করেন।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ৫ বছর ধরে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তন। স্পিকার রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের বিশ্বব্যাপী অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
শোকের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং কনজারভেটিভ ও লেবার উভয় দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে ছিল বঙ্গবন্ধুর স্থায়ী ও অমূল্য বন্ধুত্ব, যা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী ও বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডকে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলাদেশ রাইজিং’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অভাবনীয় অগ্রগতি নিয়ে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন স্পিকার।
এ সময় বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বন্ধুত্ব জোরদারকরণে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য এবং একজন হাউস অব লর্ডস সদস্যের অবদানের কথাও তুলে ধরেন স্পিকার।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা এবং হাউস অব লর্ডসের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্জিত অসামান্য অর্থনৈতিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশকে নতুন এশিয়ান টাইগার হিসেবে স্বীকৃতি দেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সব ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান স্পিকার।
অনুষ্ঠান শেষে স্পিকার লন্ডনের গ্ল্যাডস্টোন পার্কে লন্ডন বরো অব ব্রেন্টের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু সেন্টেনারি পিস গ্রোভ’ পরিদর্শন করেন। ঐতিহাসিক মুজিববর্ষের প্রাক্কালে এখানে শতাধিক চারা রোপণ করা হয়।