দেশটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী চলে যাওয়ার পর ও সোমবার পশ্চিমা দেশগুলো তাড়াহুড়া করে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার মধ্যেই তালেবান এ ঘোষণা দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গোঁড়া ইসলামি দলটির যোদ্ধারা কাবুলে প্রবেশের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি; রক্তপাত এড়াতেই দেশ ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে দেশ ত্যাগে মরিয়া শত শত আফগান কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতেই তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম আল জাজিরা টেলিভিশনকে বলেন, “আজ আফগান জনগণ ও মুজাহিদিনদের জন্য একটা মহান দিন। তারা ২০ বছর ধরে তাদের ত্যাগের ও চেষ্টার ফল দেখতে পাচ্ছে।“আল্লাহকে ধন্যবাদ, দেশে যুদ্ধ শেষ হয়েছে।”
তড়িৎ গতির অভিযান শুরু করার প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তালেবান। রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মধ্যদিয়ে অভিযান শেষ হয়।
তাদের এ অভিযানে বছরের পর বছর ধরে দেওয়া প্রশিক্ষণ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের সরবরাহ করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধ উপকরণে সজ্জিত আফগান বাহিনী উধাও হয়ে যায়।
রোববার কাবুলে ঢুকে তালেবান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দলটির একজন নেতার বরাত দিয়ে কয়েকটি সংবাদ সংস্থা জানায়, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকেই শিগগিরই তারা এই দেশকে আবার ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফিগানিস্তান’ ঘোষণা করবে।
আল জাজিরার সম্প্রচারিত ফুটেজে কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বহু সশস্ত্র যোদ্ধাকে দেখা গেছে, তাদের তালেবান কমান্ডার বলে বর্ণনা করেছে গণমাধ্যমটি।
নাঈম জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনের বিষয়টি শিগগিরই পরিষ্কার করা হবে। তালেবান বিচ্ছিন্নতার মধ্যে থাকতে চায় না এবং শন্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আহ্বান জানায় বলে জানিয়েছেন তিনি।
বলেছেন, “আমরা যা চেয়েছিলাম সেখানে পৌঁছেছি, এটি হচ্ছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও জনগণের স্বনির্ভরতা। অন্য কারও ওপর হামলা চালাতে কাউকে আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবো না এবং আমরা অন্যের ক্ষতি করতে চাই না।
সোমবার ভোররাতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রস উয়িলসনসহ দূতাবাসের সব কর্মীকে কাবুল বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা আফগানিস্তান ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন।
কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা নামানোর পর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জাপানসহ ৬০টিরও বেশি দেশ এক যুক্ত বিবৃতিতে আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া আফগান ও বিদেশি নাগরিকদের অবশ্যই চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে।